খবর

ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলা, ২ শতাধিক ইহুদি নিহত, ফিলিস্তিনে যুদ্ধের কারণ

ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক ইহুদি নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৯৮ জন ফিলিস্তিনিও নিহত হয়েছে।

ইসরাইলে হামাসের রকেট হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক ইহুদি নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৯৮ জন ফিলিস্তিনিও নিহত হয়েছে। ৭ অক্টোবর ২০২৩ সকাল সাড়ে ৬টায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মুসলিম সংগঠন হামাসের হামলার মাধ্যমে উভয় পক্ষের নতুন যুদ্ধ শুরু হয়।

এদিকে হামাসের হামলার পর গাজায় পাল্টা বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ পর্যন্ত ১৯৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলে হামাসের মারাত্মক হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের সহিংসতার বিষয়ে আগামীকাল রোববার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

বড় সংঘাত এড়াতে মধ্যপ্রাচ্যে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত এড়িয়ে শান্তি ফেরানো যেতে পারে।’

হামাসের এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে প্রতিরক্ষা সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের সরকার ও জনগণের সঙ্গে আছি। এই হামলায় ইসরায়েলিদের প্রাণ হারানোর জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি।’

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জাচি হানেগবির সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জেক সুলিভান।

ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় নিহত অন্তত ২২ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় নিহত অন্তত ২২
ন্যাটোর মুখপাত্র ডিলান হোয়াইট বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আছি। মুক্ত সমাজ গঠনে সন্ত্রাসবাদ প্রধান হুমকি। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’

ইসরায়েলে হামাসের এ হামলায় ফ্রান্স, জার্মানি ও ভারত নিন্দা জানিয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে এত বড় হামলা চালানোর জন্য ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় নেতারা। সৌদি আরব ও মিসর দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে সৌদি আরব দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

ইসরাইল ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণ

মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন নামের যে এলাকা, সেটি ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমানদের পরাজয়ের পর ব্রিটেন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন ফিলিস্তিনে যারা থাকতো তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল আরব, সেই সঙ্গে কিছু ইহুদী, যারা ছিল সংখ্যালঘু। উনিশশো বিশ থেকে ১৯৪০ দশকের মধ্যে ইউরোপ থেকে দলে দলে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে যেতে শুরু করে এবং তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে ইহুদীরা ফিলিস্তিনের কিছু অংশকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে। এভাবে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের সূচনা হয়। ইসরাইল পশ্চিমা দেশের সহায়তা নিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে এবং প্রতি বছর দখলকৃত ভূখণ্ডের পরিধি বাড়াচ্ছে।

আরো দেখুন : ফিলিস্তিনের ইতিহাস (উইকিপিডিয়া)

হামাস অর্থ কি, কি চায়, প্রতিষ্ঠাতা কে

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হরকাত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া যা ‘হামাস’ নামেই বেশি পরিচিত। আরবি ভাষায় হামাস শব্দের আভিধানিক অর্থ সাহস বা উদ্যম।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি দখলদারত্বের অবসানের দাবিতে ‘ইন্তিফাদা’ বা ফিলিস্তিনি গণজাগরণ শুরুর পর ১৯৮৭ সালে হামাস গঠিত হয়। কট্টর ইসরায়েলবিরোধী আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমাদ ইয়াসিনের নেতৃত্বে আবদেল আজিজ আল-রান্তিসি ও মাহমুদ জহর সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। তবে অনেক সংবাদমাধ্যম একে ‘ইসলামী সংগঠন’, ‘বিদ্রোহী গোষ্ঠী’ ও ‘স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বাহিনী’ হিসেবেও উল্লেখ করে।আশির দশকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আত্মপ্রকাশ করে হামাস। 

হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমাদ ইয়াসিন। তাকে ২০০৪ সালে ইসরাইল ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করে। হামাসের বর্তমান প্রধানের নাম ইসমাইল হানিয়া।

হামাস কোন দেশের গেরিলা সংগঠন?

হামাস ফিলিস্তিনের গেরিলা সংগঠন। এই সংগঠনটির মূল কেন্দ্র ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যাকা।

5/5 - (7 votes)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page